একটা সময় ছিল যখন মৌচাক মার্কেটের তিনতলায় কিছু ব্লাউজ পেটিকোটের দোকান ছিল। দোকানে কোন কাস্টমার গেলেই দোকানদার খুব বুকটা ফুলিয়ে ড্রয়ার থেকে একটা ভিজিটিং কার্ড বের দিত। তাতে লেখা থাকত “জুলমত আলী, সিইও এন্ড প্রোঃ লতা ব্লাউজ কর্নার। এখানে উন্নতমানের রেডিমেড ব্লাউজ পেটিকোট বিক্রয় করা হয় এবং অর্ডার নেয়া হয়। বিক্রিত মাল ফেরত লওয়া হয় না, দোকান নং ৭৪, ৩য় তলা, মৌচাক মার্কেট” তখন থেকেই এই সিইও ব্যাপারটা নিয়ে আমার হালকা একটু কৌতূহল সৃষ্টি হয়।
 
বড় হতে হতে দেখলাম সিইও ব্যপারটা আসলে বড় কোম্পানিরও হয়। এটা শুধু মৌচাক মার্কেটের তিন তলায় সীমাবদ্ধ নয়। তারপর এক পর্যায়ে নিজেও একটা প্রপ্রাইটরি ব্যাবসা খুলে সিইও সেজে বসলাম। বুঝলাম প্রোপ্রাইটর লেখাটা বেশ একটা মহল্লার দোকানদার টাইপ বিষয়। বরং সিইও লেখাটা একটু ভাবসম্পন্ন। বেশ ভালোই যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাত খেয়াল করলাম, এই সিইও ব্যাপারটা আসলে মোটেও আর সম্মানজনক নেই। আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে এটা ইদানীং বেশ হাসির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 
দেশে মোটামুটি এখন কেউ আর বোধকরি বেকার নেই। যার কোন কাজ ধান্দা নেই সেই নীলক্ষেত থেকে একটা কার্ড ছাপিয়ে সিইও হয়ে যাচ্ছে। অন্টারপ্রিনিউয়ারশিপ এর ব্যাখ্যা না জানলেও মোটামুটি অন্টারপ্রিনিউয়ারশিপের ধাক্কায় দেশে এখন সিইওর জোয়ার। এই বিপুল পরিমাণ সিইও তৈরি হওয়াতে দেশের কোন লাভ হয়েছে কিনা জানি না, তবে অফিস পাড়ার বাড়ীওয়ালা আর নীলক্ষেতের ভিজিটিং কার্ড ব্যাবসায়ীদের যে বেশ পোয়াবারো তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

 


কপিরাইটঃ লেখক © ২০১৭। সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
probhat.com এ প্রকাশিত যেকোন লেখা প্রভাতের পূর্ব অনুমতি ব্যাতিত অন্যত্র প্রকাশ করা কিংবা অন্য যেকোন মাধ্যমে কপি পেস্ট করা বাংলাদেশ কপিরাইট আইন দারা নিষিদ্ধ।
প্রভাতে প্রকাশিত সমস্ত লেখা বাংলাদেশ কপিরাইট আইন দ্বারা নিবন্ধিত। প্রভাত একটি বাংলা সাহিত্য বিষয়ক ওয়েব সাইট। এই ওয়েব সাইটে প্রকাশিত সমস্ত লেখা লেখকের ব্যাক্তিগত সম্পদ। লিখিত অনুমতি ব্যতিরকে এই সাইটের কোন লেখা কপি করা, পরিবর্তন করা, পরিমার্জন করা, ছাপানো ইত্যাদি সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয়। প্রভাতের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে লিখুন এই ঠিকানায় admin@probhat.com